- by Koyel Majhi
- 2025-05-21 19:16:04
Loading
Loading
আবার ফিরে এসেছে কোভিড-১৯ অতিমারীর আতঙ্ক। ভারতে এই মারণ ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছিল ২০২১ সালের এপ্রিল-মে মাস নাগাদ। সেই সময় বহু পরিবারই নিজের প্রিয়জনকে হারিয়েছিল। আসলে সেই সময় করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছিল। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এটি B.1.617.2 নামে পরিচিত ছিল।
অতিমারীর তৃতীয় ঢেউয়ের সময়েও হু-হু করে বাড়তে শুরু করেছিল রোগীর সংখ্যা। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপট দেখা গিয়েছিল ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তারপর অবশ্য কোভিড অতিমারীর আতঙ্ক কাটিয়ে স্বাভাবিক হয়েছিল জনজীবন। যদিও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের দাপট আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। এই তালিকায় রয়েছে সিঙ্গাপুর এবং হংকংও। যার জেরে উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছে।যদিও এই মুহূর্তে ভারতে এ নিয়ে আতঙ্কের কোনও বিষয় নেই। কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে যে, আমরা কি শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অতিমারীর আরও একটা ঢেউয়ের সম্মুখীন হওয়ার জন্য আদৌ প্রস্তুত। এই প্রসঙ্গে নভি মুম্বইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালের জেনারেল মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. ভারত আগরওয়াল বলেন যে, এই পর্যায়ে কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী রয়েছে। এর জন্য ভ্যাকসিনকে অনেক ধন্যবাদযদিও এই মুহূর্তে ভারতে এ নিয়ে আতঙ্কের কোনও বিষয় নেই। কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে যে, আমরা কি শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অতিমারীর আরও একটা ঢেউয়ের সম্মুখীন হওয়ার জন্য আদৌ প্রস্তুত।
এই প্রসঙ্গে নভি মুম্বইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালের জেনারেল মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. ভারত আগরওয়াল বলেন যে, এই পর্যায়ে কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী রয়েছে। এর জন্য ভ্যাকসিনকে অনেক ধন্যবাদ। আর আগের সংক্রমণ থেকে স্বাভাবিক ইমিউনিটিও সহায়ক হয়েছে।
তাঁর বক্তব্য, JN.1-এর মতো নতুন ভ্যারিয়েন্টকে আপাতত খুবই মৃদু স্ট্রেন বলেই গণ্য করা হচ্ছে। আর ইতিমধ্যেই যে ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে - সে ভ্যাকসিন থেকেই হোক, স্বাভাবিক ভাবেই হোক কিংবা হাইব্রিডই হোক, তা কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে। বর্তমানে কোনও অতিরিক্ত অথবা ভ্যারিয়েন্ট-স্পেসিফিক বুস্টারের প্রয়োজন নেই। ইতিমধ্যেই যে ভ্যাকসিন নেওয়া হয়েছে, তা সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে উদ্দেশ্য সাধন করবে। সেই সঙ্গে উপসর্গের তীব্রতাও হ্রাস করবে।তবে আগের মতো প্রাথমিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলি অবলম্বন করার উপরে জোর দিয়েছেন ডা. ভারত আগরওয়াল। এর মধ্যে অন্যতম হল - জনবহুল জায়গায় মাস্ক পরে থাকা, হাত পরিষ্কার রাখা ইত্যাদি।এদিকে ভারতের প্রথম সারির এপিডেমিওলজিস্ট হলেন ডা. রমণ গঙ্গাখেড়কর। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর প্রথম ঢেউয়ের সময় সরকারি তরফে রোজকার স্বাস্থ্য আপডেট দিতেন তিনি। এবারের কোভিড-১৯ এর নতুন সংক্রমণের বিষয়ে সকলকে শান্ত থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ডা. রমণ গঙ্গাখেড়কর জানান যে, যতক্ষণ না হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, ততক্ষণ আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
নতুন ভ্যারিয়েন্ট থেকে অ্যান্টিবডিগুলি কি সুরক্ষা দেবে?
আগের কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি প্রসঙ্গে ডা. আগরওয়াল ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন যে, এই ধরনের অ্যান্টিবডিগুলির ধীরে ধীরে অবনতি হয়। যা ইমিউন রেসপন্সের অত্যন্ত স্বাভাবিক অঙ্গ। তিনি আরও বলেন যে, যদিও এটা সম্পূর্ণ ভাবে লুপ্ত হয় না। আর তা দেহের প্রতিরক্ষা কৌশলকে সাহায্য করে।কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য কি আমরা মানসিক ভাবে প্রস্তুত?
এই সংক্রমণ আমাদের দেহকে দুর্বল করে দিয়েছে। তবে মনেও এর জেরে পড়েছে গভীর ছাপ। Journal of Family Medicine and Primary Care-এর এক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, অতিমারীর কালে ভারতে বিশেষ করে শহরাঞ্চলে মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা বেশি পরিমাণে দেখা দিয়েছে। আবার বিশ্বব্যাপী পরিসংখ্য়ান তুলে ধরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে, কোভিড ছড়িয়ে পড়ার প্রথম বছরে উত্তেজনা এবং মানসিক অবসাদ ২৫ শতাংশ বেড়েছিল।NIMHANS-এর সাইকিয়াট্রি অধ্যাপক ডা. সুরেশ বড়া মাথ News18.com-কে বলেছেন যে, “ভারতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত এই সামাজিক-সাংস্কৃতিক নমনীয়তা। এটিই কোভিড ১৯-এর প্রতি ভারতের মনোসামাজিক প্রতিক্রিয়াকে অনন্য ভাবে কার্যকর করে তুলেছে। আমি বিশ্বাস করি যে, ভারতীয়রা যে কোনও চ্যালেঞ্জের জন্যই প্রস্তুত।”ব্রিটিশ সাইকোলজিক্যাল সোসাইটির Political Psychology Section-এর একজন মনোবিজ্ঞানী এবং কমিটির সদস্য অ্যান্টোনিওস ক্যালেন্টজিস স্বীকার করে নিয়েছেন যে, যদিও প্রতিটি সমাজই কোভিড-১৯ অতিমারী থেকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পেয়েছে, তবে ভবিষ্যতের অতিমারীর ঢেউ বা মহামারীর জন্য মানসিক প্রস্তুতির বিষয়টা এখনও ঠুনকোই।, প্রাথমিক ভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সময় থেকেই একটা অমীমাংসিত যন্ত্রণা এখনও বহন করে চলেছেন বহু মানুষই। এর মধ্যে অন্যতম হল - দুঃখ, যন্ত্রণা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা। যদি বিধিনিষেধ অথবা আতঙ্ক আবার ফিরে আসে, তাহলে এগুলিও কিন্তু আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।